টপ ওয়ার্কিং এর মাধ্যমে আমের অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তনের পদ্ধতি


 আমের অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তনের পদ্ধতি

আম স্বাদে ও গন্ধে খুবই আকর্ষণীয় ফল। ফলের গুণগতমান ও বহুবিধ ব্যবহারের কারণে প্রায় সব মানুষের কাছে এটি সমানভাবে সমাদৃত।

ভারতীয় উপমহাদেশে এই জন্য আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বেশিরভাগ আম গাছ বীজ থেকে হয়। ফলে বীজের গাছ হতে ভাল জাতের আম পাওয়া সম্ভব হয় না বা মাতৃ গাছের গুনাগুন বজায় থাকে না।
তাছাড়া অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা খারাপ জাতের গাছ দিয়ে বাগানিদের প্রতারিত করে থাকেন। যার জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন বয়সের আম গাছ চাষিরা কেটে ফেলেন। কিন্তু অতি সহজেই টপ ওয়ার্কিং এর মাধ্যমে অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তন করা যায়। ছাদ বাগান উপযোগী গাছ

টপ ওয়ার্কিং (Top Warking)  অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তন:


  •  এই পদ্ধতিতে জাত পরিবর্তনের জন্য প্রথমে অনুন্নত জাতের আম গাছকে সমূেলে না কেটে হালকা (২০-২৫সেমি.পরিধির) ডালগুলো কেটে দিয়ে পরে সেখান থেকে যখন আঙ্গুলের মতো মোটা(৫-৬সেমি.পরিধির) ডাল বের হয়,
  • তখন তাতে কোন উন্নত জাতের সায়ন বা ডাল সংযোগ করে নতুন জাতে রুপান্তর করা হয়। সাধারণত একটি আম গাছের কয়েকটি প্রধান শাখা থাকে। আবার প্রতিটি প্রধান শাখা থেকে কয়েকটি প্রশাখা বের হয়। 
  • শীত শেষে যখন একটু গরম পড়ে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে গাছের দু একটি প্রধান শাখার শাখা প্রশাখা ছেটে ফেলতে হয়। 
  • গাছ কর্তনের পরে গাছে সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা করতে হবে। সাধারণত দেখা যায়, ডাল কর্তনের ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর নতুন শাখা বের হয়।
  •  তবে মাটির অবস্থাভেদে এই সময় কম বেশি হতে পারে। প্রথমে দেখা যায়, কর্তিত অংশ হতে অসংখ্য নতুন কুশি বের হয়।
  •  সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত শাখাগুলো রেখে বাকিগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। গাছের বয়স অনুযায়ী ৫০ থেকে ১০০টি শাখা রাখতে হবে।

 আমের অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তনের পদ্ধতি:
 আমের অনুন্নত জাতকে উন্নত জাতে পরিবর্তনের পদ্ধতি

  •  শাখাগুলোর ববয়স যখন ৩-৪ মাস তখন জুন- জুলাই মাসে আপনার পছনদ মতো গাছ থেকে সায়ন সংগ্রহ করে ছঁাটাইকৃত গাছের নতুন শাখায় কাংখিত পরিমাণ অর্থাৎ ডাল প্রতি ১০-১২ টি করে ভিনিয়ার বা ক্লেফট গ্রাফটিং করতে হবে।
  • এভাবে প্রথম বছর গাছের দু একটি প্রধান শাখা এবং পরের বছর বাকি প্রধান শাখা গুলি রুপান্তরিত করে গাছটিকে কাংখিত কলমের গাছেপরিণত করা যাবে।
  • অবশ্য গাছকে সম্পুর্ণরুপেও কেটে ফেলা যায়, তবে এতে নার্সিং কোন শাখা থাকবে না।ফলে গাছ মরে যাওয়ার কিছুটা ঝুকি থেকে যায়। 
  • তাই টপ ওয়ার্কিং এ সব ডাল একবারে না কেটে ধাপে ধাপে কাটলে ভাল
  • গাছ কর্তনের পর এই সময় নতুন কুশিতে রোগ পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। 
  • তাই ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। 
  • প্রত্যেকটি ডালে ভিন্ন ভিন্ন জাত দ্বারা কলম করা সম্ভব।
  •  ফলে একই গাছে জাতের বৈচিত্র্যময়তা আাসে। 
কলম করার পর মূল গাছের শাখা-প্রশাখা বের হলে তা ভেঙে ফেলতে হবে। নতুন জাতে পরিবর্তিত গাছে তৃতীয় বছর হতে আম উৎপাদন শুরু হয় এবং চতুর্থ বছর হতে ভাল ফলন দিতে শুরু করে। গাছের বয়স ১০ থেকে ১৫ বছর হলে পদ্ধতিটি প্রয়োগ করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।


Comments